বিজ্ঞানী ও ঈশ্বর
বিজ্ঞানী ও ঈশ্বর |
বিজ্ঞানী ও ঈশ্বর
অনেক সময় অনেকের মুখে একথা শুনতে পাওয়া যায়-
অনেক বড় বড় বিজ্ঞানী ও ঈশ্বর মেনেছেন।
সুতরাং (বিজ্ঞান ঈশ্বরের অস্তিত্ব পায়নি বা) ঈশ্বরের অস্তিত্ব বিজ্ঞানবিরুদ্ধ ও যুক্তিবিরুদ্ধ হল কি করে? প্রশ্নটির মধ্যে একটু ভুল বোঝাবুঝি আছে। বৈজ্ঞানিকের ঈশ্বর বিশ্বাস বিজ্ঞান থেকে আসেনি, এসেছে বিজ্ঞানের সীমাবোধ থেকে। বিশ্বপ্রকৃতির রহস্যভেদের পথে অত্যাশ্চর্য অগ্রগতির পরেও অনেক কিছু অজানা থেকে যাচ্ছে, আর যেন এগোনো যাচ্ছে না। অনেক সাফল্যের পরেও অসাফল্যের অশান্তি থেকে যাচ্ছে। তখন বিজ্ঞান- সীমার ওপারে “একটা কিছু” আছে বলে কল্পনা করে কোন কোন বৈজ্ঞানিকের মন তুষ্টি ও তৃপ্তি অনুভব করে। দীর্ঘপথ পরিক্রমার পর পরিশ্রান্ত বৈজ্ঞানিক বুদ্ধি এক কল্পিত ঈশ্বরে বিশ্রান্তি লাভ করে। এই তৃপ্তিময়ী বিশ্রান্তি বৈজ্ঞানিক মননের গৌরব ঘোষণা করে না, ঘোষণা করে মননের পরাজয়, বিশ্বপ্রকৃতির উৎস সন্ধানে ব্যর্থতাবোধ সঞ্জাত এক ধরনের গ্লানি যা ঈশ্বরকল্পনার আলপনার আবরণে ঢাকা পড়ে যায়।
.
অনেক দূর এগিয়েও যখন উৎসের সন্ধান মেলে না, তখন অজানার বিরাট ফাঁকটা কোন ঈশ্বর বা অতিপ্রাকৃত চেতনসত্তা দিয়ে ভর্তি করা হয়, সঙ্গে সঙ্গে ধারণা করা হয় “এবার উৎসের সন্ধান পেলাম”। কিন্তু কি পেলেন? পেলেন তো একটা “শব্দ” যা ধর্মীয় ধারণার কল্যাণে একটা বিশেষ মাহাত্ম্য লাভ করেছে। আর পেলেন একটা কাল্পনিক অর্থ।
.
প্রশ্নটা তো থেকেই যাচ্ছে। কি এই ঈশ্বর-চৈতন্য? এরই বা উৎস কী? তখন বলা হবে অতিপ্রাকৃত চেতনসত্তার আর কোন উৎস সন্ধান চলবে না, এর কোন উৎস নেই। এটা কি রাজার আজ্ঞা? যদি শেষপর্যন্ত একটা উৎসহীন উৎসেই যেতে হয়, তাহলে স্বীকার করে নিলেই হয় বিশ্বপ্রকৃতির চূড়ান্ত উৎস বলে কিছু নেই।
.
মানুষের জ্ঞান এই শেষপ্রান্তে কোনদিন পৌছোতে পারবে না। এর অর্থ হল জানার শেষ নেই, মানুষ অনেক কিছু জেনেছে, আরাও জানবে, আরও জানবে, এ জানা কোনদিন থামবে না, তাই বিশ্বের শেষ রহস্য কোনদিন জানা যাবে না। এই না জানাটা মেনে নিতে না পারার জন্যই বিজ্ঞানীদের কল্পনাতেও ঈশ্বরের আবির্ভাব ঘটে। সেখানে সব জানার শেষ তাকে বুঝি এবার পাওয়া গেল। আসলে কিছুই পাওয়া গেল না, পাওয়া গেল শধু একটু কাল্পনিক স্বস্তির নিঃশ্বাস। এই স্বস্তিবোধ মানে বিজ্ঞানীর আত্মবঞ্চনা, স্বধর্মবিচ্যুতি।
.
বিশ্বের শেষ রহস্য জানার অর্থ হল মানুষের জ্ঞান ও সভ্যতার পরিসমাপ্তি। এ সমাপ্তি সম্ভবও নয় কামনীয়ও নয়। শেষ প্রান্তের অনিশ্চয় মেনে নিয়েই জানার সংগ্রাম এগিয়ে চলবে। অনিশ্চিতকে নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা এগিয়ে চলা বা থেমে না যাওয়াকে সুনিশ্চিত করতে হলে, প্রতি পদক্ষেপে সমনে একটা অনিশ্চিত রয়ে যাবে এ ধারণাটিও মেনে নিতে হবে। সুতরাং ঈশ্বর দিয়ে ইতি টানার চেষ্টা প্রগতির বিরোধী। অতিপ্রাকৃত কল্পনা না দিয়ে বিজ্ঞানের সমাপ্তি ঘোষণা বিজ্ঞানবিরোধী, তা তিনি যত বড়ো বৈজ্ঞানিকই হোন না কেন।
শেষ কথাটি না জানলে কিছুই জানা হল না এ ধারণা ও সম্পূর্ণ ভ্রান্ত।
তথ্যসূত্রঃ বৈদিক ধর্ম ও মীমাংসা-দর্শন।
.
অনেক দূর এগিয়েও যখন উৎসের সন্ধান মেলে না, তখন অজানার বিরাট ফাঁকটা কোন ঈশ্বর বা অতিপ্রাকৃত চেতনসত্তা দিয়ে ভর্তি করা হয়, সঙ্গে সঙ্গে ধারণা করা হয় “এবার উৎসের সন্ধান পেলাম”। কিন্তু কি পেলেন? পেলেন তো একটা “শব্দ” যা ধর্মীয় ধারণার কল্যাণে একটা বিশেষ মাহাত্ম্য লাভ করেছে। আর পেলেন একটা কাল্পনিক অর্থ।
.
প্রশ্নটা তো থেকেই যাচ্ছে। কি এই ঈশ্বর-চৈতন্য? এরই বা উৎস কী? তখন বলা হবে অতিপ্রাকৃত চেতনসত্তার আর কোন উৎস সন্ধান চলবে না, এর কোন উৎস নেই। এটা কি রাজার আজ্ঞা? যদি শেষপর্যন্ত একটা উৎসহীন উৎসেই যেতে হয়, তাহলে স্বীকার করে নিলেই হয় বিশ্বপ্রকৃতির চূড়ান্ত উৎস বলে কিছু নেই।
.
মানুষের জ্ঞান এই শেষপ্রান্তে কোনদিন পৌছোতে পারবে না। এর অর্থ হল জানার শেষ নেই, মানুষ অনেক কিছু জেনেছে, আরাও জানবে, আরও জানবে, এ জানা কোনদিন থামবে না, তাই বিশ্বের শেষ রহস্য কোনদিন জানা যাবে না। এই না জানাটা মেনে নিতে না পারার জন্যই বিজ্ঞানীদের কল্পনাতেও ঈশ্বরের আবির্ভাব ঘটে। সেখানে সব জানার শেষ তাকে বুঝি এবার পাওয়া গেল। আসলে কিছুই পাওয়া গেল না, পাওয়া গেল শধু একটু কাল্পনিক স্বস্তির নিঃশ্বাস। এই স্বস্তিবোধ মানে বিজ্ঞানীর আত্মবঞ্চনা, স্বধর্মবিচ্যুতি।
.
বিশ্বের শেষ রহস্য জানার অর্থ হল মানুষের জ্ঞান ও সভ্যতার পরিসমাপ্তি। এ সমাপ্তি সম্ভবও নয় কামনীয়ও নয়। শেষ প্রান্তের অনিশ্চয় মেনে নিয়েই জানার সংগ্রাম এগিয়ে চলবে। অনিশ্চিতকে নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা এগিয়ে চলা বা থেমে না যাওয়াকে সুনিশ্চিত করতে হলে, প্রতি পদক্ষেপে সমনে একটা অনিশ্চিত রয়ে যাবে এ ধারণাটিও মেনে নিতে হবে। সুতরাং ঈশ্বর দিয়ে ইতি টানার চেষ্টা প্রগতির বিরোধী। অতিপ্রাকৃত কল্পনা না দিয়ে বিজ্ঞানের সমাপ্তি ঘোষণা বিজ্ঞানবিরোধী, তা তিনি যত বড়ো বৈজ্ঞানিকই হোন না কেন।
শেষ কথাটি না জানলে কিছুই জানা হল না এ ধারণা ও সম্পূর্ণ ভ্রান্ত।
তথ্যসূত্রঃ বৈদিক ধর্ম ও মীমাংসা-দর্শন।
1 comment
Post a Comment