ইসকনি বৈষ্ণবদের মিথ্যাচার।

ইসকনি বৈষ্ণবদের মিথ্যাচার এবং বিভ্রান্তিকর উদ্ভট দাবি।

ইসকনের মিথ্যাচার এবং বিভ্রান্তি একঃ-
ইসকনি বৈষ্ণবদের মিথ্যাচার।

কোরানের কোথাও যে শ্রীকৃষ্ণের কোন অস্তিত্ব নেয় সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু বৈষ্ণব গণ কোরান থেকেও শ্রীকৃষ্ণ কে খুজে পায়। বর্তমানে বৈষ্ণব দের সব চেয়ে বড় সংঘটন ইসকন থেকে প্রকাশিত একটা বইতে তারা এমন দাবি করেছে। বইটার নাম "প্রশ্ন করুন উত্তর পাবেন" সেই বইয়ের ২৩১নং পৃষ্ঠা বলা হয়েছে(যা শ্রীচৈতন্য বলেছেন) "তোমার শাস্ত্র কোরানে অবশ্যই নির্বিশেষবাদ প্রথা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে; কিন্তু কোরানের শেষে সেই নির্বিশেষ তত্ত্ব খন্ডন করে সবিশেষ তত্ত্ব স্থাপিত হয়েছে"। এখানে নির্দিষ্ট কোন সূরার কথা উল্লেখ করেনি তবুও কোরানের সূরা আলাক থেকে শুরু করে শেষের যে সূরা গুলো আছে যেমন সূরা আল-কাফিরুন, আন-নাসর, আল-লাহাব, আল-ইখলাস, আল-ফালাক্ব এবং সর্ব শেষ সূরা আন-নাস পর্যন্ত ১৯টি সূরা দেখলাম। সেখানে নির্বিশেষ, সবিশেষ তত্ত্বের কোন অস্তিত্ব নাই।

মিথ্যাচার এবং বিভ্রান্তি দুইঃ-
ইসকনি বৈষ্ণবদের মিথ্যাচার।

(প্রশ্ন করুন উত্তর পাবেন) উক্ত বইয়ের ২৩২ পৃষ্ঠা তে বৈষ্ণবরা বলছে "শ্যামসুন্দর শ্রীকৃষ্ণকেই কোরানে ভগবান বলে স্বীকার করা হয়েছে" সমগ্র কোরানে শ্রীকৃষ্ণ তো অনেক দূরের কথা, কৃষ্ণের পিতাকে ও খুজে পাওয়া সম্ভব না।
কোরানে কোথাও কি বলা হয়েছে, আল্লাহ শ্যামসুন্দর?
কোরানে কি কোথাও আছে আল্লাহ্ আর এক নাম কৃষ্ণ?
আল্লাহ কৃষ্ণের মত জন্ম গ্রহণ করে, রাসলীলা করে, বাঁশি বাজায়, বিবাহ করে ইত্যাদি, এমন কোন কথা কি কোরানে আছে? তাহলে কিসের উপর ভিত্তি করে বৈষ্ণবরা এমন দাবি করেছে? যে কোরানে শ্যামসুন্দর শ্রীকৃষ্ণকেই ভগবান বলে স্বীকার করা হয়েছে।

মিথ্যাচার এবং বিভ্রান্তি তিনঃ-
ইসকনি বৈষ্ণবদের মিথ্যাচার। জিজ্ঞাসাবাদ

বৈষ্ণবদের দাবী আল্লাহ আর কৃষ্ণ আর শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু সব একই। তারা বলে...
"পরমেশ্বর ভগবান একই। হিন্দুরা তাঁকে কৃষ্ণ মুসলমানেরা তাকে আল্লাহ বলেন"।
কোরাণ শাস্ত্রে নাকি বলা হয়েছে--
"কোরাণ শাস্ত্রেও আল্লার দুই উদার হস্ত ঊর্ধ্ব দিকে প্রসারিত বলে বর্ণিত হয়েছে। আর শ্রীচৈতন্য চরিতামৃতেও বর্ণনা রয়েছে শ্রীকৃষ্ণের ঔদার্য রুপ গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর দুই হস্ত ঊর্ধ্বদিকে প্রসারিত। গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ"।
আপনার নিজেরা বুদ্ধি দিয়ে বিচার করে দেখুন। এর চেয়ে হাস্যকর দাবি এবং ভণ্ডামি আর কি হতে পারে।
(তথ্যসূত্রঃ প্রশ্ন করুন উত্তর পাবেন, পৃষ্ঠা- ২৩৬)

মিথ্যাচার এবং বিভ্রান্তি চারঃ-
ইসকনি বৈষ্ণবদের মিথ্যাচার। জিজ্ঞাসাবাদ

ইসকন বৈষ্ণবদের দাবি "মোহাম্মদ(স) ছিলেন একজন ভগবৎ-তত্ত্বজ্ঞ ব্যক্তি এবং ভগবানের বাণী প্রচারের জন্য ভগবৎ-নির্ধারিত" (তথ্যসূত্রঃ ভগবদগীতার সারতত্ত্ব, পৃষ্ঠা-৪৮)
ইসকনি বৈষ্ণবদের কথা মতো তো দেখা যাচ্ছে হিন্দুদের উচিৎ সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে, ইসলাম গ্রহণ করে মুসলিম হয়ে যাওয়া; সেটাই নয় কি? কোরানে সব চেয়ে কঠোর শাস্তির কথা বলা হয়েছে “শিরক” এর জন্য, যা এমন এক পাপ, আল্লাহ কখনো ক্ষমা করেন না, শিরকের কোন ক্ষমা নাই। কোরানে বলা হয়েছে-
তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর ও কোন কিছুকে তার শরীক করো না। (৪:৩৬)  (১)
“নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সাথে শিরক করাকে ক্ষমা করবেন না, আর তার থেকে ছোট যাবতীয় গুনাহ যাকে ইচ্ছা করেন ক্ষমা করে দেবেন, আর যে কেউ আল্লাহর সাথে শিরক করে সে ভীষণভাবে পথ ভ্রষ্ট হয়। (৪:১১৬)  (২)
শিরক অর্থ হচ্ছে আল্লাহ্ সাথে অন্য কাউকে শরিক বা অংশীদার করা। দেবদেবীদের বা মূর্তিকে আল্লা মনে করা হচ্ছে শিরক। প্রতিমা ইত্যাদির পূজাপাট শিরকের অন্তরভুক্ত। (৩)
আর আল্লাহ্ সাথে অংশীদার করার শাস্তি হচ্ছে....
“নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহ্ অংশীস্থাপন করবে, আল্লাহ্ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন এবং তার বাসস্থান হবে জাহান্নাম। আর এরুপ অত্যাচারীদের জন্যে কোন সাহায্যকারী থাকবে না।” (৫:৭২) 
নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন হচ্ছে ইসলাম। (৩:১৯)  (৪)
আর কেই ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনো তার পক্ষ থেকে কবুল করা হবে না এবং সে হবে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত। (৩:৮৫)  (৫)
কোরান থেকে উপরিউক্ত তথ্য তুলে ধরার উদ্দেশ্য হচ্ছে বৈষ্ণবদের মিথ্যাচার, ভণ্ডামি আরো সুস্পষ্ট করা। ইসকনি বৈষ্ণবদের দাবি আল্লাহ আর কৃষ্ণ এবং শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু সব একই, মোহাম্মদ(স) ছিলেন একজন ভগবৎ-তত্ত্বজ্ঞ ব্যক্তি। অথচ কোরানে পরিষ্কার বলা হয়েছে আল্লাহ্ সাথে কাউকে শরীক না করার জন্য, কোন অংশীদার না করার জন্য, যদি করে তবে তারা শিরক করার গুনাহ করবে। যার কোন ক্ষমা নাই তারা জাহান্নামে জ্বলবে। কিন্তু বৈষ্ণবরা আল্লাহ্ সাথে শ্রীকৃষ্ণকে, চৈতন্য কে অংশীদারি বা শিরক করছে, কোরান মতে যা হচ্ছে একটা পাপ। বৈষ্ণবগণ যেহেতু আল্লাহ সাথে কৃষ্ণ কে অংশীদার করেছে সেহেতু তারা হচ্ছে জাহান্নামি। তারা যখন মোহাম্মদ(স) কে একজন ভগবৎ-তত্ত্বজ্ঞ ব্যক্তি বলে, তাহলে তাদের তো উচিৎ তীর্থ করতে না গিয়ে হজ্জ করে আসা। জাহান্নামি বৈষ্ণবরা বলবে কোরান দেয়া হয়েছিল অল্পবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের জন্য, আমাদের জন্য না। যদি তাই হয়, তবে আপনাদের ঈশ্বর কৃষ্ণ মানে আল্লা আবার কোরানে কেন বললেন? নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন হচ্ছে ইসলাম। তবে কৃষ্ণ মানে আল্লাহ আবার এই কথা বলে মানুষের মধ্যে বিবাদ কেন সৃষ্টি করলেন? একটা মিথ্যাকে আড়াল করার জন্য আর কত মিথ্যার রচনা করবেন?

মিথ্যাচার এবং বিভ্রান্তি পাচঁ-
ইসকনি বৈষ্ণবদের মিথ্যাচার। জিজ্ঞাসাবাদ

ইসকনের একাধিক বই তে যীশু কে অবতার বা ভগবানের প্রেরিত প্রতিনিধি হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করে। তারা বলেন ধর্মে গ্লানি দেখা দিলে ও অধর্মের অভ্যুত্থান হলে ভগবান অবতীর্ণ হন। কখনো তিনি স্বয়ং আসেন, কখনো তিনি তার অন্তরঙ্গ সেবক ভক্তদেরকে তার প্রতিবিধি হিসাবে পাঠান-- যেমন যীশু(পুত্র)
(তথ্যসূত্রঃ ভগবদগীতা সারতত্ত্ব পৃষ্ঠা-৬৯)
ইসকনের একাধিক বইতে তারা এই দাবিও করে যীশুর জন্মের ভবিষ্যত বাণী নাকি ভবিষ্যতেপুরাণ করা হয়েছে। কিন্তু তা ভবিষ্যতপুরাণের কোথায় আছে সেটা উল্লেখ করে না। শুধু বলে যীশু-ভবিষ্যপুরাণ। কিন্তু যদি ভবিষ্যপুরাণে যিশুর, মোহাম্মদ(স) বা অন্য কারো কথা থাকলেও তা গ্রহণযোগ্য না, কারণ ভবিষ্যপুরাণ কোন গ্রহণযোগ্য পুরাণ না। যীশু কোন অবতার নয়।
শেষ কথা হচ্ছে.....
ইসকনের জাহান্নামি বৈষ্ণব এরুপ মিথ্যাচার করার, বিভ্রান্তি প্রচারের উদ্দেশ্য কি?

তথ্য প্রমাণঃ
(১) সূরা আন-নিসা, আয়াত- ৩৬
ইসকনি বৈষ্ণবদের মিথ্যাচার। জিজ্ঞাসাবাদ


(২) সূরা আন-নিসা, আয়াত- ১১৬
ইসকনি বৈষ্ণবদের মিথ্যাচার। জিজ্ঞাসাবাদ


(৩) তাফসীরে আল জালালাইন, পৃষ্ঠা-৩৩৯
ইসকনি বৈষ্ণবদের মিথ্যাচার। জিজ্ঞাসাবাদ


(৪) সূরা আলে-ইমরান, আয়াত- ১৯
ইসকনি বৈষ্ণবদের মিথ্যাচার। জিজ্ঞাসাবাদ


(৫) সূরা আলে-ইমরান, আয়াত-৮৫
ইসকনি বৈষ্ণবদের মিথ্যাচার। জিজ্ঞাসাবাদ




2 comments

Unknown said...

সুন্দর

Anonymous said...

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তার 'একা এবং কয়েকজন' বইতে লিখেছেন- মুসলমানরা জানে কেন তারা মুসলমান। কিন্তু হিন্দুরা হলো: "বারো জাতের তেরো হাড়ি।"
সনাতন ধর্মাবলম্বী ভাইবোনেরা ও মাথাসম্পন্ন ব্যক্তিরা, আপনারা নিজেদের ধর্মচর্চাই করেন। অন্যের ধর্মকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করার সাহসও করবেন না।
একটা প্রশ্নের উত্তর দিন তো, যে কৃষ্ণের পূজা করেন, সে তো জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তার তো জন্মাষ্টমী পালন করেন, তাহলে সে কি সৃষ্টি নয়? আর তারও তো বাবা মা আছে, তারাও তো সৃষ্টি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাদের স্রষ্টা কে?

নিজেরাই গীতা লিখেন, নিজেরাই ইডিট করেন, বছর বছর নতুন সংস্করণ বের করেন, এখনো সে অভ্যাসটাই রয়ে গেছে। এখন অন্যের কিতাবেও হাত দেওয়ার লোভ সামলাতে পারছেন না। সাবধান বলে দিচ্ছি। আল্লাহর কিতাবে হাত দিবেন না। এ হাত আর হাত নাও থাকতে পারে।

Theme images by LordRunar. Powered by Blogger.