নাথুরাম গডসের জবানবন্দি
(প্রথম পর্ব)
১৫ নভেম্বর, বীর দেশপ্রেমিক, নাথুরাম গডসের বলিদান দিবস।
(নাথুরাম গডসের সেই ঐতিহাসিক জবানবন্দি সম্বলিত এই লেখাটি পড়তে পড়তে যখন শেষ হয়ে আসবে, তখন আপনার অন্তরাত্মা নিশ্চয় ডুকরে কেঁদে উঠবে।)
অব্যাহত মুসলিম তোষণ; এর ফলে ভারত মাতার দ্বিখণ্ডন এবং এর ফলে মুসলমানদের দ্বারা ২০ লক্ষ হিন্দু ও শিখের মৃত্যু এবং কয়েক লক্ষ হিন্দু ও শিখ মেয়ের মুসলমান কর্তৃক ধর্ষিতা হওয়ার ঘটনার জন্য প্রত্যক্ষভাবে দায়ী মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীকে, নাথুরাম গডসে, ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি, বিকেল ৫ টায় দিল্লির বিড়লা ভবনের সামনে গুলি করে হত্যা করে। সেই সময় গান্ধী তার দুই নগ্ন শয্যাসঙ্গিনী মানু ও কানু গান্ধীর কাঁধে ভর করে, ১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া সাম্প্রদায়িক হানাহানি বন্ধে বিভিন্ন মন্দিরে মন্দিরে গান্ধীর আয়োজনে যে প্রার্থনা সভা চলছিলো, তাতে যোগ দেওয়ার জন্য বিড়লা ভবন থেকে বের হচ্ছিলো। খেয়াল করুন, মুসলমানরা যখন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে, তলোয়ার দিয়ে হিন্দু ও শিখদের হত্যা করছিলো, মেয়েদের ধর্ষণ করছিলো, হিন্দু ও শিখদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিয়ে তাদেরকে দেশ থেকে তাড়াচ্ছিলো, সেই সময় গান্ধী মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে এই হানাহানি বন্ধে প্রার্থনা সভার আয়োজন করে যাচ্ছিলো আর সেই প্রার্থনা সভায় কোরানের আয়াত পাঠ করে শোনাচ্ছিলো, যার শ্রোতা একমাত্র হিন্দুরা। মুসলমানরা হিন্দুদের হত্যা করছে, আর গান্ধী কোরানের আয়াত শোনাচ্ছে সেই সব হিন্দুদের, যে হিন্দুরা নিজেরাই কিনা কোরানের আয়াত অনুসারে মুসলমানদের দ্বারা আক্রান্ত।
এই অপদার্থ, মুসলিমতোষক ও নপুসংক গান্ধীর হাত থেকে হিন্দুজাতি তথা ভারতকে বাঁচানোর জন্য, গডসে পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে পর পর তিনটি গুলি করে। সাথে সাথে গান্ধী মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পিস্তলের গুলিতে যাতে অন্য কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য গডসে হাত উঁচু করে, এক পাও না নড়ে, ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। প্রকৃত বীর কাকে বলে, সেটা একবার চিন্তা করুন। গুলি করার পর গডসে পালায় নি, পালানোর চেষ্টা করে নি, এমনকি সে সেকথা ভাবেও নি। কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে গডসেকে নিয়ে যায়। পৃথিবীর ইতিহাসে সম্ভবত এই একমাত্র আসামী, যাকে খুনের ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করতে পুলিশকে বিন্দু মাত্র কষ্ট স্বীকার করতে হয় নি।
৬৫৫ দিন ধরে গডসের বিচার চলে। বিচারে গডসে তার পক্ষে কোনো উকিল নিয়োগ করেন নি। আত্মপক্ষ সমর্থন করে গডসে যে বক্তব্য প্রদান করে, তাই “নাথুরাম গডসের জবানবন্দি” নামে পরিচিত।
গান্ধী খুনের ঘটনায়, নাথুরাম গডসের সাথে ষড়যন্ত্রকারী ও সহযোগী হিসেবে নাথুর ভাই গোপাল গডসে সহ আরও সাতজনকে আসামী করা হয়। কিন্তু আদালতে, গডসে, কোনোরকম সংঘবদ্ধ ষড়যন্ত্রের কথা অস্বীকার করে এবং নিজেই গান্ধী হত্যার সম্পূর্ণ দায় নিজের কাঁধে নেয়, ফলে অন্যান্যরা এই মামলা থেকে মুক্তি পায়। কিন্তু আদালতে দেওয়া গডসের ভাষণ, জনসম্মুখে যাতে প্রকাশ না হয়, সে জন্য নেহেরুর কংগ্রেস সরকার তা প্রকাশ না করার বাধ্যবাধকতা করে আইন পাশ করে। ফলে দীর্ঘদিন ভারতবাসী, গান্ধী হত্যার প্রকৃত কারণ সম্পর্কে, গডসে কী বলেছে, সে সম্পর্কে অন্ধকারেই থেকে যায়। কিন্তু ১৯৬৮ সালে বোম্বে হাইকোর্টে দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলায় আদালত গডসের জবানবন্দি প্রকাশের পক্ষে রায় দেয় এবং তারপরই ভারতবাসীসহ সারা পৃথিবীর জানতে পারে, গান্ধী হত্যার প্রকৃত কারণ।
এরপর ১৯৭৭ সালে গান্ধী হত্যার আপিল মামলার একজন বিচারপতি, জি.ডি খোসলা, নাথুরামের জবানবন্দি এবং বিচার সম্পর্কিত নানা বিষয় নিয়ে একটি বই লিখেন এবং তারপরে নাথুর ভাই গোপাল গডসেও, কেন নাথুরাম, গান্ধীকে হত্যা করেছে, তার বিষদ বর্ণনা দিয়ে একটি বই প্রকাশ করে, এই দুটি বইয়ের মাধ্যমেই মূলত ভারতবাসীসহ সারা পৃথিবীর সচেতন লোকজন এখন মোটামুটি জানে যে, নাথুরাম গডসে কেন নিজেকে বলি দিয়ে গান্ধীকে হত্যা করেছিলো।
আদালতের বিচারপতিরা গডসেকে প্রশ্ন করেছিলো, কেনো গান্ধীকে হত্যা করলেন?
এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে গডসে যা বলেছিলো, সেটাই “নাথুরাম গডসের জবানবন্দি” হিসেবে এখন পরিচিত ও বিখ্যাত। এতে গডসে গান্ধীকে হত্যার কারণ সম্পর্কে যা বলেছিলো, তার সেই বক্তৃতার মধ্যেই গান্ধী হত্যার সকল কারণ, সংক্ষেপে মোটামুটি বর্ণনা করা আছে। সেই জবানবন্দিটি এখানে উল্লেখ করছিঃ
“একটি নিবেদিতপ্রাণ ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম নেয়ায় আমি স্বাভাবিকভাবে হিন্দু ধর্ম, হিন্দু ইতিহাস ও হিন্দু সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ি; হিন্দুত্বের প্রতি আমার গভীর মমত্ববোধ জেগে উঠে। বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমার মধ্যে কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোঁড়ামিমুক্ত স্বাধীন চিন্তার বিকাশ ঘটে। যে জন্য আমি অচ্ছুত প্রথা ও জন্মগত বর্ণভেদ উচ্ছেদে নিজেকে নিয়োজিত করি। আমি খোলাখুলি জাতপাত বিরোধী আন্দোলনে যোগদান করি এবং বিশ্বাস করতে শুরু করি, সামাজিক ও ধর্মীয় অধিকারের প্রশ্নে প্রতিটি হিন্দুর মর্যাদা সমান। শুধু যোগ্যতার ভিত্তিতেই উচ্চ-নিচ ভেদাভেদ হতে পারে। এ ভেদাভেদ জন্মগতভাবে কোনো বিশেষ বর্ণের বা পেশার কারণে হতে পারে না। আমি প্রকাশ্যে বর্ণবাদ বিরোধী ভোজে অংশ নেই। এসব ভোজে হাজার হাজার হিন্দু ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, কায়স্থ, বৈশ্য, চামার ও বাঙ্গি যোগ দেয়। আমরা বর্ণভেদ প্রথা ভেঙ্গে দেই এবং একে অপরের সঙ্গে খাবার খাই।
আমি প্রাচীন ও আধুনিক ভারতের ইতিহাস পাঠ করেছি। ইংল্যান্ড, আমেরিকা ও রাশিয়ার মতো কয়েকটি প্রভাবশালী দেশ সম্পর্কেও পড়াশোনা করেছি। তাছাড়া দাদাভাই নওরোজি, স্বামী বিবেকানন্দ, গোখলে ও তিলকের লেখা বই-পুস্তক ও বক্তৃতাও প্রচুর পাঠ করেছি। শুধু তাই নয়, আমি সমাজতন্ত্র ও মার্ক্সবাদের মূল বিষয়বস্তুও পাঠ করেছি। তবে আমি বিশেষভাবে পাঠ করেছি বীর সাভারকার ও গান্ধীজীর লেখা বই-পুস্তক ও তাদের বক্তৃতা। আমি বিশ্বাস করি বিগত ত্রিশ বছর যাবৎ এ দু’ ব্যক্তির চিন্তা ও কার্যকলাপ ভারতীয়দের যতদূর প্রভাবিত করেছে অন্য কোনো ব্যক্তির চিন্তা ও আদর্শ ততটুকু প্রভাব বিস্তারে সক্ষম হয়নি। এসব পড়াশোন ও চিন্তা-ভাবনা থেকে আমি ভাবতে শুরু করি, একজন দেশপ্রেমিক ও বিশ্ব নাগরিক হিসাবে হিন্দুরাজ ও হিন্দুত্ব প্রতিষ্ঠা করাই আমার প্রথম কাজ। ৩০ কোটি হিন্দুর (১৯৪৮ সালে) ন্যায়সঙ্গত স্বার্থরক্ষা এবং তাদের স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মানবজাতির এক-পঞ্চমাংশের স্বাধীনতা ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠিত হবে। এ বিশ্বাস আমাকে হিন্দু সনাতনী আদর্শ ও কর্মসূচির প্রতি আত্মনিয়োগে অনুপ্রাণিত করে। আমি আরো বিশ্বাস করতে শুরু করি, হিন্দু সনাতনী আদর্শই কেবল আমার মাতৃভূমি হিন্দুস্তানের জাতীয় স্বাধীনতা অর্জন ও সংরক্ষণ করতে পারে।
এখানে “দ্বিতীয় পর্ব”
আদালতের বিচারপতিরা গডসেকে প্রশ্ন করেছিলো, কেনো গান্ধীকে হত্যা করলেন?
এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে গডসে যা বলেছিলো, সেটাই “নাথুরাম গডসের জবানবন্দি” হিসেবে এখন পরিচিত ও বিখ্যাত। এতে গডসে গান্ধীকে হত্যার কারণ সম্পর্কে যা বলেছিলো, তার সেই বক্তৃতার মধ্যেই গান্ধী হত্যার সকল কারণ, সংক্ষেপে মোটামুটি বর্ণনা করা আছে। সেই জবানবন্দিটি এখানে উল্লেখ করছিঃ
“একটি নিবেদিতপ্রাণ ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম নেয়ায় আমি স্বাভাবিকভাবে হিন্দু ধর্ম, হিন্দু ইতিহাস ও হিন্দু সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ি; হিন্দুত্বের প্রতি আমার গভীর মমত্ববোধ জেগে উঠে। বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমার মধ্যে কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোঁড়ামিমুক্ত স্বাধীন চিন্তার বিকাশ ঘটে। যে জন্য আমি অচ্ছুত প্রথা ও জন্মগত বর্ণভেদ উচ্ছেদে নিজেকে নিয়োজিত করি। আমি খোলাখুলি জাতপাত বিরোধী আন্দোলনে যোগদান করি এবং বিশ্বাস করতে শুরু করি, সামাজিক ও ধর্মীয় অধিকারের প্রশ্নে প্রতিটি হিন্দুর মর্যাদা সমান। শুধু যোগ্যতার ভিত্তিতেই উচ্চ-নিচ ভেদাভেদ হতে পারে। এ ভেদাভেদ জন্মগতভাবে কোনো বিশেষ বর্ণের বা পেশার কারণে হতে পারে না। আমি প্রকাশ্যে বর্ণবাদ বিরোধী ভোজে অংশ নেই। এসব ভোজে হাজার হাজার হিন্দু ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, কায়স্থ, বৈশ্য, চামার ও বাঙ্গি যোগ দেয়। আমরা বর্ণভেদ প্রথা ভেঙ্গে দেই এবং একে অপরের সঙ্গে খাবার খাই।
আমি প্রাচীন ও আধুনিক ভারতের ইতিহাস পাঠ করেছি। ইংল্যান্ড, আমেরিকা ও রাশিয়ার মতো কয়েকটি প্রভাবশালী দেশ সম্পর্কেও পড়াশোনা করেছি। তাছাড়া দাদাভাই নওরোজি, স্বামী বিবেকানন্দ, গোখলে ও তিলকের লেখা বই-পুস্তক ও বক্তৃতাও প্রচুর পাঠ করেছি। শুধু তাই নয়, আমি সমাজতন্ত্র ও মার্ক্সবাদের মূল বিষয়বস্তুও পাঠ করেছি। তবে আমি বিশেষভাবে পাঠ করেছি বীর সাভারকার ও গান্ধীজীর লেখা বই-পুস্তক ও তাদের বক্তৃতা। আমি বিশ্বাস করি বিগত ত্রিশ বছর যাবৎ এ দু’ ব্যক্তির চিন্তা ও কার্যকলাপ ভারতীয়দের যতদূর প্রভাবিত করেছে অন্য কোনো ব্যক্তির চিন্তা ও আদর্শ ততটুকু প্রভাব বিস্তারে সক্ষম হয়নি। এসব পড়াশোন ও চিন্তা-ভাবনা থেকে আমি ভাবতে শুরু করি, একজন দেশপ্রেমিক ও বিশ্ব নাগরিক হিসাবে হিন্দুরাজ ও হিন্দুত্ব প্রতিষ্ঠা করাই আমার প্রথম কাজ। ৩০ কোটি হিন্দুর (১৯৪৮ সালে) ন্যায়সঙ্গত স্বার্থরক্ষা এবং তাদের স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মানবজাতির এক-পঞ্চমাংশের স্বাধীনতা ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠিত হবে। এ বিশ্বাস আমাকে হিন্দু সনাতনী আদর্শ ও কর্মসূচির প্রতি আত্মনিয়োগে অনুপ্রাণিত করে। আমি আরো বিশ্বাস করতে শুরু করি, হিন্দু সনাতনী আদর্শই কেবল আমার মাতৃভূমি হিন্দুস্তানের জাতীয় স্বাধীনতা অর্জন ও সংরক্ষণ করতে পারে।
এখানে “দ্বিতীয় পর্ব”
No comments
Post a Comment